বিএনপিতে তারেক সিন্ডিকেটে কোণঠাসা ফখরুল

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শীঘ্রই রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা না থাকায় দলে তারেক রহমান সিন্ডিকেট এখন অধিক সক্রিয়। বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তারাই এখন বেশি প্রভাব বিস্তার করছে। সুবিধা আদায় করতে তারা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চেয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এ কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। এছাড়া দলীয় হাইকমান্ডের জাতীয় কাউন্সিলে অনীহার সুযোগে সুবিধাভোগী নেতারা এখন বিভিন্ন স্তরে দল পুনর্গঠনের কথা বলে কমিটি বাণিজ্য করছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএনপির রাজনীতি এখন কোন্ পথে এ নিয়ে দলের সাধারণ নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে চলছে নানামুখী জল্পনা-কল্পনা।

নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত দলের অবস্থা নড়বড়ে হলেও তা উত্তরণে কোন পদক্ষেপ নেই বিএনপি হাইকমান্ডের। বরং বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন তুঙ্গে। চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজনীতি থেকে দূরে থাকায় দলে এখন দুটি সিন্ডিকেট নিজ নিজ অবস্থানে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন। একটি সিন্ডিকেট লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশে অধিকাংশ সিনিয়র নেতাকে আড়াল করেই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আর অপর সিন্ডিকেটটি দলে নিজেদের সাধ্যমতো কোন কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও অনেক সিদ্ধান্তের বেলায়ই আগাম কিছু জানেন না। এ নিয়ে দলের মধ্যে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করলেও অনেক সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী লন্ডনে সরাসরি যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন বিষয়ে প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অথবা সাংবাদিকদের ব্রিফ করে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন।

সূত্র মতে, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হওয়ার আগ পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নির্দেশেই দলের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। কিন্তু কারাবন্দী হওয়ার পর থেকেই লন্ডন থেকে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে থাকেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রথম দিকে মহাসচিবসহ কিছু সিনিয়র নেতার পরামর্শ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেও এখন অধিকাংশ সিদ্ধান্তই তিনি এককভাবে নেন। আর কোন কোন বিষয়ে মতামত নিলেও এ বিষয়ে তিনি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চেয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে বেশি প্রধান্য দেন। দলে তারেক সিন্ডিকেটের নেতা বলে পরিচিতরাও কোন বিষয়ে মহাসচিবের সঙ্গে পরামর্শ না করে রুহুল কবির রিজভীর মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন।

এদিকে তারেক রহমানের আশকারা পেয়ে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পাত্তা না দিয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীই অধিকাংশ সময় সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ করায় এ নিয়ে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে কোন বিষয়ে রিজভী সিদ্ধান্তের কথা জানালেও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম তা আগে জানতে পারেন না। এ কারণে তিনি এখন নয়াপল্টন কার্যালয়েও খুব একটা যান না। মাঝে মাঝে হাইকমান্ডের নির্দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কোন সিদ্ধান্তের কথা জানালেও একই বিষয়ে একই দিনে নয়াপল্টন কার্যালয় থেকেও সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন রুহুল কবির রিজভী।

সূত্র মতে, দলের বিভিন্ন বিষয়ে মহাসচিবের চেয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের মতামত প্রধান্য পাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা এখন গুলশান কার্যালয়ের চেয়ে নয়াপল্টন কার্যালয়কে বেশি প্রধান্য দিচ্ছে। তারা নিয়মিত সেখানে গিয়ে রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ জন্য নয়াপল্টন কার্যালয়ে বিএনপি নেতাদের আনাগোনা বেশি লক্ষ্য করা যায়। আর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিয়মিত বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে গেলেও সেখানে নেতাকর্মীদের তেমন আনাগোনা লক্ষ্য করা যায় না।

জানা যায়, একসময় বিএনপিতে কমিটি বাণিজ্য হতো গুলশান কার্যালয় কেন্দ্রিক। কিন্তু এখন সে চিত্রও পাল্টে গেছে। এখন হাইকমান্ডের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় কেন্দ্রিক একটি সিন্ডিকেট দলের কমিটি বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। সম্প্রতি দল থেকে কারণ দর্শাও নোটিস পেয়ে উত্তেজিত হয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ দলে কমিটি বাণিজ্য হচ্ছে বলে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে তিনি বর্তমানে দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রভাব বিস্তার করায় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বিএনপির কিছু নেতা দলে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের কোণঠাসা করতে চাচ্ছেন। তাই দলে আমার চেয়ে নিচের পদে থাকা রুহুল কবির রিজভীর দেয়া কারণ দর্শাও নোটিস পেয়ে হতবাক ও অপমানিত বোধ করেছি। বিএনপি কেন আজকে ক্ষমতার বাইরে? কারা এর জন্য দায়ী দলের নেতাকর্মীদের তা ভেবে দেখার আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ক্ষোভের বহির্প্রকাশ হিসেবে সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জিয়াউর রহমানের রেখে যাওয়া বিএনপি ৪২ বছর পরে মানসিকভাবে খণ্ডবিখণ্ড, সাংগঠনিকভাবেও খণ্ডবিখণ্ড। কারও সঙ্গে কারও মিল নেই। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে লাগে, একজন আরেকজনকে খাটো করে।

সারাদেশে চলমান বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন দেন লন্ডনে বসে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রুহুল কবির রিজভীসহ তারেক রহমান সিন্ডিকেটের কিছু নেতা নিজেদের কোন কোন পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন পাইয়ে দিতে পারলেও বিএনপি মহাসচিব বা অন্য কোন সিনিয়র নেতা এ বিষয়ে কোন মতামতই দিতে পারেন না। যদিও মনোনয়ন বোর্ডে দলের সকল স্থায়ী কমিটির সদস্যই উপস্থিত থাকেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়েও তারেক রহমান সিন্ডিকেটের সঙ্গে অন্য নেতাদের চরম দ্বন্দ্ব চলছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, অতীতের কিছু ভুল ও সময়োপযোগী রাজনীতির অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপি রাজনৈতিকভাবে চরম বেকায়দায়। এ অবস্থার অবসানে বহু চেষ্টা করেও কোনভাবেই সফল হতে পারছে না দলটি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দীর্ঘ প্রায় তিন বছর দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকায় দলে এখন তারেক রহমান সিন্ডিকেট অধিক সক্রিয়। তাদের কর্মকাণ্ড মেনে নিতে না পারায় দলের অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই এখন নিষ্ক্রিয়। আর অনেক কেন্দ্রীয় নেতা নিষ্ক্রিয় থাকায় তাদের অনুসারী তৃণমূল পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মীও দল বিমুখ হয়ে পড়েছে। এ কারণে সর্বস্তরে দলটির এখন বেহাল দশা বিরাজ করছে। দলীয় রাজনীতি হয়ে পড়েছে স্থবির। এ স্থবিরতা কাটাতে বাস্তবমুখী কোন পদক্ষেপ নেই।

দলীয় কর্মকাণ্ডে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতির সুযোগে লন্ডন প্রবাসী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ তার অনুসারী ক’জন নেতা দলের বেহাল দশা কাটাতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছেন বলে সাধারণ নেতাকর্মীদের জানালেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। তবে অধিকাংশ সিনিয়র নেতাই তারেক রহমান অনুসারীদের কর্মকাণ্ডে সায় দিচ্ছে না। বরং অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় থাকায় বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান দিন দিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর এ কারণে দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।

বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাময়িক মুক্তি পেয়ে প্রায় ১০ মাস ধরে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজা’য় অবস্থান করলেও দলীয় রাজনীতি নিয়ে তিনি এখন মাথা ঘামান না। এ পরিস্থিতিতে লন্ডন প্রবাসী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে খুব একটা পাত্তা দেন না সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তারেক রহমানের নির্দেশে প্রায়ই তিনি অন্য কাউকে কিছু না জানিয়েই দলীয় বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কথা প্রচার করেন। আবার কখনও কখনও তারেক রহমানকে কৌশলে বুঝিয়ে রাজি করে অন্য কারো সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে ফেলেন। এ নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও তারেক রহমান নাখোশ হতে পারেন ভেবে কোন প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন না। আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এ নিয়ে কাউকে কিছু বলেন না। তবে এভাবে দলে গুরুত্বহীন করা নিয়ে তার চাপা ক্ষোভ রয়েছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে কোন কোন সিদ্ধান্তের কথা দলের অন্য নেতাদের জানান। কখনও কখনও দলীয় কোন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। তবে দলে ক্লিন ইমেজের অধিকারী হিসেবে পরিচিত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কখনও দলীয় কর্মকাণ্ড নিয়ে কোন বিবাদে জড়াতে চান না। তাই তাকে অবহিত না করেও যদি কোন নেতা দলের কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত প্রচার করেন তাহলে তিনি কাউকে কিছু বলেন না। তবে কোথাও কোন সমস্যা হলে তিনি তা সমাধানের চেষ্টা করেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই জাতীয় কাউন্সিল করে দলকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিএনপির কিছু সিনিয়র নেতা। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও তাই চান। এ বিষয়ে তারা কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ারও মতামত নেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার অনুসারীরা জাতীয় কাউন্সিলের বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করেন। তাদের মতে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অনুস্থিতিতে কাউন্সিল হলে এর নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে। তাই এ পরিস্থিতিতে জাতীয় কাউন্সিল ও নতুন নির্বাহী কমিটি হলে দলে তাদের অবস্থান খর্ব হতে পারে। তবে নির্ধারিত সময়ে দলের জাতীয় কাউন্সিল না হওয়ায় আইনগতভাবেও বেকায়দায় পড়ে বিএনপি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুসারে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে ৩ বছর পর পর জাতীয় কাউন্সিল করার বাধ্যবাদকতা রয়েছে। কিন্তু পৌনে ৫ বছর আগে বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল হয় ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ। বিএনপির গঠনতন্ত্রেও ৩ বছর পর পর জাতীয় কাউন্সিল করে নতুন কমিটি করার কথা রয়েছে। সে হিসেবে বিএনপি চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। এ ছাড়া তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ। সর্বস্তরে দলের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে বিএনপির রাজনীতি।

আগের জাতীয় কাউন্সিল হওয়ার পর প্রায় পৌনে ৫ বছর অতিক্রম করায় বিএনপির পরবর্তী নির্বাহী কমিটিতে নতুন করে স্থান পেতে দুই শতাধিক নেতা জাতীয় কাউন্সিলের অপেক্ষায় রয়েছেন। তাদের সঙ্গে অপেক্ষায় রয়েছেন সংস্কারপন্থী কিছু বিএনপি নেতাও। তাদের দলীয় হাইকমান্ড আগেই পরবর্তী কমিটিতে স্থান দেয়ার আশ্বাস দিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়া যারা ৫৯২ সদস্যের বর্তমান নির্বাহী কমিটির অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন তারাও ভাল ভাল পদে যাওয়ার জন্য কাউন্সিলের অপেক্ষায়। সময়মতো জাতীয় কাউন্সিল না করায় দলের এসব পদ প্রত্যাশী নেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। তবে হাইকমান্ড নাখোশ হতে পারে ভেবে তারা প্রকাশ্যে কিছুই বলছেন না।

সম্প্রতি কাউকে কিছু না জানিয়েই হঠাৎ করে বিএনপির দুই ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ ও শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শাও নোটিস দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তারেক রহমানের নির্দেশ পেয়ে নিজের স্বাক্ষরে কারণ দর্শাও নোটিস দেন তিনি। কিন্তু তাঁর নিজের পদ ভাইস চেয়ারম্যানের নিচে হলেও কি করে মহাসচিবের সঙ্গে কোন কথা না বলে তিনি এ নোটিস দেন এ নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। জানা যায়, তারেক রহমান বলয়ের বাইরে থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের কিছু নেতার অবস্থান খর্ব করতে রুহুল কবির রিজভীসহ কিছু নেতা উঠেপড়ে লেগেছেন। তারা চাচ্ছেন পরবর্তী জাতীয় কাউন্সিলের আগেই বিএনপির নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নিতে। এর পর জাতীয় কাউন্সিল করে মহাসচিব পদসহ শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ পদ দখলে নিতে। আর দলের এ বলয়ের কারণেই এখন বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল হচ্ছে না। জাতীয় কাউন্সিল না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান এখন চরম সঙ্কটের মুখে।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশে অনীহা প্রকাশ করে জনকণ্ঠকে বলেন, বিভিন্ন কারণে দলের অবস্থা এখন খারাপ। দুর্দিনে যা হয় দলের নেতাকর্মীদেরও এখন সেই অবস্থা। চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজনীতি থেকে দূরে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে থাকায় এ অবস্থা বিরাজ করছে। জাতীয় কাউন্সিল করার পাশাপাশি সর্বস্তরে দল গুছিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তা হচ্ছে না। তবে সকল সমস্যা কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও আছে।

সূত্র: জনকন্ঠ

Leave a Reply