যাদের মেয়ে আছে, সন্তান আছে তারা একটু ভেবে দেখুন: সায়মার বাবা

রাজধানীর ওয়ারীতে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার শিশু সায়মা আফরিনের বাবা আবদুস সালাম দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, আপনাদের যাদের মেয়ে আছে, সন্তান আছে এরকম কুরুচিপূর্ণ, এরকম পশুত্বসুলভ আচরণকারীদের কাছ থেকে কিভাবে দূরে রাখবেন, আপনারা একটু ভেবে দেখবেন। এসব পশুর কাছ থেকে বাচ্চাদের রক্ষার চেষ্টা করুন। আমি হয়তো পারি নাই আমার মেয়েকে রক্ষা করতে।

রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের কাছে এ প্রতিক্রিয়া জানান সায়মার বাবা। সেই সঙ্গে দ্রুত সময়ে তার মেয়ের হত্যাকারীকে গ্রেফতার করায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় খেলার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিল সিলভারডেল স্কুলের কেজির ছাত্রী সায়মা। এরপর অনেক সময় গড়ালেও সে আর ফিরে আসেনি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের ভবনেরই আটতলার একটি ফাঁকা ফ্ল্যাটে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা আবদুস সালাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারী থানায় মামলা করেন।

যাদের মেয়ে আছে, সন্তান আছে তারা একটু ভেবে দেখুন: সায়মার বাবা

ঘটনায় হারুন উর রশিদ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে কুমিল্লা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে রোববার দুপুরে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন। তিনি জানান, হারুন অর রশিদকে কুমিল্লা থেকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে শিশু সায়মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হারুন একাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান। গ্রেফতার হারুনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। ওয়ারীর যে ভবনে সায়মাকে হত্যা করা হয় ওই ভবনেই কাজিনের বাসায় থাকতেন তিনি।

ব্রিফিংয়ের এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের কাছে নিজের আকুতি তুলে ধরেন শিশু সায়মার বাবা আবদুস সালাম। তিনি বলেন, আপনারা কেউ মেয়ের বাবা, ছেলের বাবা। আপনাদের হয়তো আমার মেয়ের মত মেয়ে আছে। আজকে আমার মেয়ের উপর নির্মম নির্যাতনের ঘটনা আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে দেশবাসী জানতে পারল বা দেখল। আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এই আসামিকে  ধরতে পুলিশ প্রশাসনের যারা এর পেছনে কাজ করেছেন তাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। তারা সুন্দরভাবে অতি অল্প সময়ের মধ্যে মূল আসামি একজন নিশ্চিত হয়ে তাকে ধরতে পেরেছে।

তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আমার মূল দাবি, ওর যে শাস্তি হওয়ার তা যেন অতি দ্রুত সময়ে ৩-৬ মাসের মধ্যে হয়। সর্বোচ্চ শাস্তি বলতে আমি এটি বুঝাচ্ছি যে, আমার মেয়েকে যেহেতু দুই রকম নির্যাতন করে ও হত্যা করেছে। আমি তার ফাঁসি চাই। আমি তার ফাঁসি অতি দ্রুত সময়ে কার্যকর করার জোর দাবি জানাচ্ছি। আমার স্ত্রীর কাছ থেকে মেয়েটা বলে গিছিল ১০ মিনিটের জন্য ওপর তলা যায়, এসে আমি পড়া দেব। যেভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে আমরা কিভাবে ধৈর্য ধারণ করব। এই ঘটনায় আমার পরিবার পুরাটাই বিধ্বস্ত।  

Leave a Reply