করোনার সঙ্গে বসবাস রপ্ত করতে হবে আমাদের : ওবায়দুল কাদের

সবাইকে সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনার সঙ্গে বসবাস রপ্ত করতে হবে আমাদের সবাইকে।

মঙ্গলবার (১২ মে) নিজ বাসভবন থেকে ভিডিও বার্তায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। ত্রাণে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে একটি মতলবি মহল কল্পিত অভিযোগ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্বে বর্তমানে ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার বিস্তার ঘটেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বশেষ ৩৪তম। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, পাকিস্তানসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের অবস্থান ভালো হলেও পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতিশীল। ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে বলেই স্পষ্টত প্রতীয়মান হচ্ছে।

করোনা সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই কার্যকর পন্থা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এমন সংকটে আমাদের সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাধারণ ছুটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করার পর বাণিজ্য কেন্দ্র, ফেরিঘাট, তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য কারখানায় এবং সর্বত্র স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান উপেক্ষিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, সামান্য উপেক্ষা বড় বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে। তাই এখন থেকেই সতর্ক থাকার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ করছি। করোনার সঙ্গে বসবাস রপ্ত করতে হবে আমাদের সবাইকে।’

প্রধানমন্ত্রী জনগণকে সচেতন থাকতে সংক্রমণ রোধে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন জানিয়ে কাদের বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চিকিৎসাসহ সার্বিক পরিস্থিতি গভীরভাবে মনিটরিং করছেন। আমরাও আমাদের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা করাসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করছি। আপনাদের মনোবল রাখতে হবে, সাহস রাখতে হবে। শেখ হাসিনা সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সৎ ও সাহসী নেতৃত্বে ইনশাআল্লাহ আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’

অনলাইন শপিংয়ের আহ্বান কাদেরের

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শপিংমলে যারা সরাসরি কেনাকাটা করছেন, সেখানে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। তাই সরাসরি না গিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় অনলাইনে কেনাকাটার বিষয়টিও আজকাল জনপ্রিয় হয়েছে। অনেকেই অনলাইনে শপিং করছেন, অত্যাবশ্যকীয় না হলে পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে অনলাইন শপিংয়ে কেনাকাটা করতে আহ্বান জানাচ্ছি। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যাবে।’

প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখার অনুরোধ

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখা, বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা পরিস্থিতিগত কারণে সীমিত হয়ে পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ তথা রোগীরা অন্যান্য রোগের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করে প্রতিদিন কিছু সময় প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখার জন্য চিকিৎসকদের কাছে আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতেও সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করে অন্য রোগীদের সেবা চালুর অনুরোধ জানাচ্ছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে পথিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন। সম্প্রতি একজন অতিরিক্ত সচিবসহ কয়েকটি ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যেসব চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট করোনাযুদ্ধে ফ্রন্টলাইনে কাজ করছেন, তাদের পাশাপাশি যারা প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখছেন এবং যেসব হাসপাতাল স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত রেখেছে তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

প্রসঙ্গ ত্রাণে অনিয়ম
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ত্রাণ কার্যক্রমে অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে। ইতোমধ্যে অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত, প্রশাসনিক ও দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সেটাই প্রমাণ করে। সরকার কঠোর অবস্থানে আছে বলে সামান্য অনিয়ম ধরা পড়লেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে একটি মতলবি মহল যে কল্পিত অভিযোগ করছে, সেটা কিছুতেই সমর্থনযোগ্য নয়।’

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ, ১ কোটি মানুষকে রেশনের আওতায় আনা ও ৫০ লাখ মানুষকে নগদ সহায়তা প্রদান সমসাময়িক বিশ্বে নজিরবিহীন বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

আরএমএম/এসআর/পিআর

Leave a Reply