মসজিদে বিস্ফোরণের জন্য তিতাসের ৮ জন কর্মকর্তা বরখাস্ত

নারায়ণগঞ্জে তল্লা এলাকায় মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস গ্যাসের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে মসজিদে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা সংগঠিত হওয়ার অভিযোগে এই ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) তাদের বরখাস্তের সঙ্গে সঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়।

বিস্তারিত আসছে…

নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাসের পাইপ লাইনের ত্রুটি খুঁজে বের করতে মাটি খোঁড়া শুরু করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

সোমবার সকাল থেকে তিতাস গ্যাসের শ্রমিকরা মসজিদের পাশে চারটি পয়েন্টে রাস্তা কেটে মাটি সরানোর কাজ শুরু করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদের পূর্ব দিকের কোণে, পূর্ব দিকের সামনের সড়ক এবং উত্তর দিকের দুটি স্থানে কংক্রিটের রাস্তা কেটে তিতাসের পাইপলাইনের অবস্থান বের করার চেষ্টা চলছে। প্রায় অর্ধশত শ্রমিক শাবল, ছেনি, কোদালসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে সেখানে কাজ করছেন।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মফিজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মূল পাইপলাইনটি বের করার জন্য মাটি খোঁড়া হচ্ছে।

“মসজিদের নিচ দিয়ে পুরনো কোনো পাইপলাইন আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মূল পাইলাইন বের করা গেলে সেখান থেকে কোন শাখা লাইন গেছে কিনা সেটি জানা যাবে।”

পশ্চিম তল্লার ওই মসজিদে শুক্রবার এশার নামাজের সময় বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

সে সময় মসজিদে থাকা অর্ধশতাধিক মানুষের সবাই কমবেশি দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে মসজিদের ইমাম আব্দুল মালেকসহ ২৬ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন আরও ১১ জন।

সেই রাতে ওই মসজিদের ছয়টি এসি বিস্ফোরিত হওয়ার কথা বলা হলেও পরে দেখা যায়, বিস্ফোরণে এসিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেগুলোর কোনোটিই বিস্ফোরিত হয়নি।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই মসজিদের নিচ দিয়ে তিতাসের যে গ্যাসের পাইপ গেছে, সেখানে লিকেজ থেকে গ্যাস জমে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে তারা।

এ ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, সিটি করপোরেশন আলাদা পাঁচটি কমিটি গঠন করেছে।

এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে পশ্চিম তল্লা ও আশপাশের এলাকায় গত তিন দিন ধরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

লাকড়ি দিয়ে মাটির চুলায়, কেরোসিনের স্টোভ বা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হচ্ছে তাদের। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন।

Leave a Reply